Sunday, August 22, 2010

তাকে

কে তুমি পদ্মপত্রে মুখ?
কে তুমি আবাল্য অসুখ?
আমার কিছুই মনে পড়ে না
আজ।

কিন্তু ক্কচিৎ প্রখরতার
সঙ্গে মেশা প্রথম আলাপ-
এইরকম কি ছিল?
হেলাফেলা সারাবেলা
প্যামফ্লেট আর পোস্টার মেলা
অঢেল পোর্টিকোতে
পুরোনো সিঁড়িটা, বহু শোধবোধ,
ভাঙা টিটিবোর্ড, বইয়ের গন্ধ,
ট্রামরাস্তাটা বৃষ্টিতে দেখো
নুইয়ে পড়ল-

কে তুমি স্মৃতির মধ্যে জরা?
কে তুমি অকাল স্বয়ম্বরা?

আমার কিছুই মনে পড়ে না
আজ।

এখানে অনেক দেওয়াল,
এবং আলগা আবছায়া,
ধুলোয় ভরা রোদ, অনেক
মানুষ-
একা;
ওদের মাথায় ভর
দিয়েছেন বাদশাহী ঈশ্বর,
সেই পবিত্র হারেমে
এক বালিকা দেন দেখা।

কে তুমি উন্মাদিনী রাই?
কে তোমার নির্বাসনের সাঁই?
আমার কিছুই মনে পড়ে না
আজ।

(বাংলালাইভ শারদীয়া ১৪১৫)

Wednesday, August 18, 2010

ন্যাকারবোকার পদ্য

একা ন্যাকা খাচ্ছিল শাঁক আলু সেদ্ধ,
 তার সাথে দু পাঁইট ছিল যে বরাদ্দ।
  হেনকালে বোকা এসে বলে ন্যাকা ভাই রে,
  তোর আছে লাইসেন, মোর কিছু নাই রে।
  ন্যাকা বলে, "শোন তবে কুমড়োর ছেঁচকি,
  ফার্স্ট তোকে হতে হবে মোর মত সেস্কি।
  দুই ফোঁটা এন জি ও, পাঁচ ফোঁটা কর্পো,
  কানে গুঁজে মহা রেলা  জনসম্পক্কো।
  এক হাতে দাড়িদা বা দেরিদার বাইবেল,
   আর হাতে মোবাইল, বাকার্ডির মাইফেল"।

Monday, August 9, 2010

ভাষাবন্ধন জুলাই সংখ্যা


দেশভাগ্ সম্পর্কিত কয়েকটি বই
বৈজয়ন্ত চক্রবর্তী

হাসান আজিজুল হক; আগুনপাখি (কলকাতা: দে' পাবলিশি, প্রথম প্রকাশ: কলকাতা, ২০০৮);
ত্রিদিব চক্রবর্তী, নিরুপমা রায় মন্ডল, পৌলোমী ঘোষাল সম্পা: ধ্বংস নির্মাণ: বঙ্গীয় উদ্বাস্তু সমাজের স্বকথিত বিবরণ (কলকাতা: সেরিবান, স্কুল অব কালচারাল টেক্সট্স্ অ্যান্ড রেকর্ডস্, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, প্রথম প্রকাশ: কলকাতা, ২০০৭)
সেমন্তী ঘোষ সম্পা: দেশভাগ: স্মৃতি আর স্তব্ধতা (কলকাতা: গাঙচিল, প্রথম প্রকাশঃ কলকাতা, ২০০৮)

"আমাকে কেউ বোঝাইতে পারলে না যি সেই দ্যাশটো আমি মোসলমান বলেই আমার দ্যাশ আর এই দ্যাশটি আমার লয়৷ আমাকে আরও বোঝাইতে পারলে না যি ছেলেমেয়ে আর যায়গায় গেয়েছে বলে আমাকেও সিখানে যেতে হবে৷ আমার সোয়ামি গেলে আমি আর কি করব? আমি আর আমার সোয়ামি তো একটি মানুষ লয়, আলেদা মানুষ৷ খুবই আপন মানুষ, জানের মানুষ, কিন্তুক আলেদা মানুষ"-আগুনপাখি, হাসান আজিজুল হক
 
দেজ পাবলিশিং প্রকাশিত উপন্যাসটির পিছনের প্রচ্ছদে এই কয়টি লাইন উদ্ধৃত৷ লাইনগুলি উপন্যাসটির মূল মোটিফের সার্থক ধরতাই যোগায়৷ হাসান আজিজুল হকের মত শক্তিশালী কাহিনীকারের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস হিসেবে "আগুনপাখি" অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ৷ অনেকের কাছে হয়ত বা আনন্দ পুরস্কার প্রাপ্তি উপন্যাসটিকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দান করে৷ কিন্তু আপাতত: আমি লাইন কটির পিছনে একটি উপমহাদেশ এবং তার অগুন্তি সাধারণ মানুষের ইতিহাসের সিল্যুয়েট ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাই না৷হয় তো আরও অনেক কিছুই দেখা সম্ভব৷ একজন মুসলমান নারীর গার্হস্থ্য আত্মকথন চলতি যুগের অ্যাকাডেমিক ফ্যাশনের নিরিখে বহুমাত্রিক বিশ্লেষণের সম্ভাবনায় উজ্জ্বল৷ উপন্যাসটির সরলরৈখিক আটপৌরে চলন কি ইচ্ছাকৃত একটি শৈলী, যা দেশভাগের বিয়োগান্ত মহাকাব্যের একটি সমান্তরাল নারীবাদী ভাষ্যের জন্ম দেয়? অথবা, বন্যা মন্বন্তরের পরে যৌথ পরিবারের ভাঙন কি পরবর্তী সময়ের আরও বড় ভাঙনের রূপকাভাস? প্রশ্নগুলি এই মুহূর্তে আমি এড়াতে চাই৷ বস্তুত: উপন্যাসটির প্রথাগত সমালোচনা আদৌ লেখাটির উদ্দেশ্য নয়৷ হাসান আজিজুল হলের মত প্রবাদপ্রতিম কাহিনীকারের সৃষ্টির ভালোমন্দ বিচারের স্পর্ধা বা সামর্থ্য -কোনোটাই অর্জন করি নি এখনও৷ উপন্যাসটির গপ্পোটি জেনে নেওয়ার দায়িত্বটাও পাঠকপাঠিকার উপরই ন্যস্ত করি৷ বরং কম্পাসপ্রতিম বাক্যগুলি বুকপকেটে রেখে কিছু এলোমেলো ভাবনার রাস্তায় বেরিয়ে পড়ি৷