সন্ধ্যার অন্ধকার ক্রমে গাঢ় হইয়া আসিতেছে। তাঁহার ক্ষুদ্র কামরাটির এক কোণে একটি সেজবাতি জ্বালাইয়া জ্যাঠামশায় পড়িতেছিলেন। এমন সময় দরজার সম্মুখে একটি ছায়ার অনুভব হইল। মুখ তুলিয়া দেখেন শ্রীবিলাস দাঁড়াইয়া আছে। জ্যাঠামশায়ের মুখ স্মিতহাস্যে ভরিয়া উঠিল। হাসিয়া বলিলেন, &হয়ষঢ়;দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে'।
শ্রীবিলাস । অনেকদিন আপনার সাথে দেখা করা হয় নি। আজ নববর্ষের প্রণাম করতে এলাম।
জেঠামশায়। কেন বল তো শ্রীবিলাস? শ্রদ্ধেয়কে প্রণামের প্রথার বিরুদ্ধে আমি আর কিছু বলি না। কিন্তু বাংলা নববর্ষের প্রণাম কেন? বাঙালীর নববর্ষ এখনও কি তোমার কাছে খুব অর্থবহ মনে হয়?
শ্রীবিলাস । অতশত জানি না, কিন্তু আপনাকে প্রণাম আমি করবই।
জেঠামশায়। তা অবশ্যই করবে, হাত খুলে করবে, প্রাণ ভরে করবে।
একা ন্যাকা খাচ্ছিল শাঁক আলু সেদ্ধ,
তার সাথে দু পাঁইট ছিল যে বরাদ্দ।
হেনকালে বোকা এসে বলে ন্যাকা ভাই রে,
তোর আছে লাইসেন, মোর কিছু নাই রে।
ন্যাকা বলে, "শোন তবে কুমড়োর ছেঁচকি,
ফার্স্ট তোকে হতে হবে মোর মত সেস্কি।
দুই ফোঁটা এন জি ও, পাঁচ ফোঁটা কর্পো,
কানে গুঁজে মহা রেলা জনসম্পক্কো।
এক হাতে দাড়িদা বা দেরিদার বাইবেল,
আর হাতে মোবাইল, বাকার্ডির মাইফেল"।
গড়িয়া থেকে মাঠপুকুরের তিৎকুটে এক ভিড় বাক্সোবাসের করুণ কোণে চোখের মাথা খেয়ে ঘাড় ঘোরাতেই অবাক আলোয় পড়ল ধরা অনাঘ্রাত তিল; ঢাকল মৌটুসি মোবাইল।
৩
ভালোবাসা পেলে আমি মোটেও লণ্ডভণ্ড যাব না, জবুথুবু আলাভালা বসে থাকব ছড়ানো রোদ্দুরে। বস্তুতঃ সেরকম ভালোবাসা পেলে কেই বা বেঁচে থাকে? মরে যায় পুনর্জন্মে ভালবাসা ফিরে পাবে বলে।
৪
চুমু তোমার ভ্রণে যখন লুকোনো আশ্বিনে বাউল এবং দেবী আঁকেন শরীরজোড়া ছবি; কাঁপে তীব্র রেখাব স্বর, গড়ি ঘরের মধ্যে ঘর।
৫
পাঁচ মানুষের ভিড়, গৃহস্থ অস্থির। চার মানুষের মাথা, কথার পিঠে কথা। তিন মানুষের বংশ, সৃষ্টি পালন ধ্বংস। দুই মানুষের ঘর, কোথায় অবসর? একটি মানুষ একা, ঈশ্বরী দেন দেখা।